রমনার বটমূল থেকে: জাতিসত্তার অনিন্দ্য প্রকাশের দিনটির সূচনা হলো রমনা বটমূলে ছায়ানটের প্রভাতী সঙ্গীতায়োজনে। ভোরের রাগালাপ দিয়ে শুরু হলো পহেলা বৈশাখের আয়োজন। স্বাগত ১৪২৩।
অশুভ তৎপরতা রুখে দেয়ার প্রত্যয়ে ঐতিহ্যবাহী সংগঠনটি নববর্ষে মানবতার ডাক দিয়েছে। নতুন বছরের প্রথম প্রহরে বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) মানবতার মর্মবাণী ধারণ করে স্বাগত জানানো হলো ১৪২৩ বঙ্গাব্দকে।
প্রায় দেড়শ’ শিল্পীর অংশগ্রহণে এ অনুষ্ঠান শুরু হয় সকাল সোয়া ৬টায়। ভোরের রাগালাপ দিয়ে শুরু হওয়া এ অনুষ্ঠান শেষ হবে ড. সনজীদা খাতুনের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে। ১৫টি একক গান, ১২টি সম্মেলক গান, ৩টি আবৃত্তি ও পাঠ দিয়ে সাজানো হয়েছে এবারের অনুষ্ঠান।
এবারের নববর্ষ আসছে প্রকৃত অর্থে বাঙালি জাতির নতুন করে জেগে ওঠার তাগিদ নিয়ে। বটমূলের আয়োজনের এবার ৪৯ বছর। ১৯৬৭ সালে পাকিস্তান আমলে প্রতিকূল পরিবেশে বাঙালির আপন সত্তা জাগিয়ে তোলা এবং আপন সংস্কৃতিতে বাঁচবার বিশ্বাস প্রতিষ্ঠা করার মানসে বাংলা বছরকে আবাহন জানাবার উদ্যোগ নেয় ছায়ানট।
গত প্রায় পাঁচ দশক ধরে দেশপ্রেমে সমৃদ্ধ পূর্ণাঙ্গ বাঙালি হয়ে ওঠার, পুরাতনের আবর্জনা দূর করে নতুন সৃজনের প্রত্যয়ে উদ্দীপ্ত হওয়ার, মানুষকে ভালবেসে সবার সঙ্গে মিলে নবযাত্রায় শামিল হওয়ার প্রেরণাসঞ্চারী প্রভাতী সঙ্গীতায়োজন করে আসছে মানুষের ভালবাসাধন্য এই সংগঠন। প্রাণিত করেছে আপামর বাঙালিকে। দিনে দিনে বাংলা নবর্বষের অনুষ্ঠান প্রসারিত হয়েছে সারাদেশে। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন আজ বাঙালির সবচেয়ে বড় মিলনমেলা, রূপান্তরিত হয়েছে জাতীয় উৎসবে।
সকালের শুরুতে সম্মেলক পরিবেশনায় যেসব গানের আয়োজন রয়েছে সেগুলো হচ্ছে-‘আনন্দধ্বনি জাগাও গগনে, আমরা তো উজ্জ্বল সূর্য, ভোর ক’রে যাই কালরাত্রি,আমি ভয় করব না ভয় করব না, আমি মারের সাগর পাড়ি দেব, ওই মহামানব আসে, টলমল টলমল পদভরে বীরদল চলে সমরে, হবে জয়,হবে জয়,হবে জয় রে’ ইত্যাদি গান।
যেসব শিল্পী গান পরিবেশন করছেন তারা হলেন, আবদুল ওয়াদুদ, আবুল কালাম আজাদ, আফসানা রুনা, ইলোরা আহমেদ শুক্লা, এটিএম জাহাঙ্গীর,খায়রুল আনাম শাকিল প্রমুখ।একক পাঠ-আবৃত্তি করছেন, তাপস মজুমদার, দেওয়ান সাইদুল হাসান এবং মাছুমা জাহান।